উষ্ণতা হারিয়ে বিজ্ঞানীদের ধারণার চেয়েও দ্রুত শীতল হচ্ছে পৃথিবীর অভ্যন্তর। আর এই ভু-অভ্যন্তর শীতল হয়ে গেলে নষ্ট হবে পৃথিবীর চুম্বকীয় ক্ষেত্র। বায়ুমণ্ডলও তখন মধ্যাকর্ষণের বাঁধনমুক্ত হবে সহজে।

পৃথিবী হারাবে বিভিন্ন প্রকারের গ্যাস, বায়ুমণ্ডলের সুরক্ষা ছাড়া সরাসরি সুর্যালোকে বাষ্পীভূত হবে সাগর-মহাসাগরের সমস্ত পানি। এক কথায় কোনো প্রাণীর জীবনধারণের পরিবেশ থাকবে না তখন। পৃথিবীর কোর বলে পরিচিত সবচেয়ে অভ্যন্তরের ভূগোলক দ্রুত তাপ নিঃসরণ করছে। সৃষ্টির আদিকাল থেকেই পৃথিবী এর অভ্যন্তরের বিপুল পরিমাণ উত্তাপ ভূপৃষ্ঠে নির্গত করে আসছে।

তাপ নির্গমনের এই প্রক্রিয়ায় চালিত হয় পৃথিবীর সবচেয়ে গভীরে অবস্থিত ভূগোলক (কোর) এবং তার সাথে টেকটনিক প্লেটগুলোর সঞ্চালন। পৃথিবীর ‘কোর’ বলে পরিচিত অভ্যন্তরের গলিত অংশটির একদম বাইরের আবরণ বা ‘ম্যান্টল’- এর উপর ভাসমান টেকটনিক প্লেট।
যা জানালেন বিজ্ঞানীরা

বিজ্ঞানীরা তাদের সাম্প্রতিক গবেষণায় ব্রিজমেনাইটের একটি স্ফটিককে পালস লেজার দিয়ে বিকিরিত করেন। এর ফলে স্ফটিকের উত্তাপ ২ হাজার ৪৪০ ডিগ্রী কেলভিনে পৌঁছায়, আর সৃষ্টি হয় ৮০ গিগাপ্যাসকেলের মতো প্রচণ্ড চাপ। ম্যান্টেলের নিম্ন অংশেও ঠিক একইরকম তাপ ও চাপ কাজ করে। একদম নিচের অংশে যা সর্বোচ্চ হতে পারে ২ হাজার ৬৩০ কেলভিন ও ১২৭ গিগাপ্যাসকেল।

গবেষণায় নেতৃত্বদানকারী বিজ্ঞানী মোতোহিকো মুরাকামি বলেন, এভাবে আমরা ব্রিজমেনাইটের তাপ পরিবাহী ক্ষমতা মেপেছি, তাতে জানা গেছে এটি আমাদের ধারণার চেয়ে দেড় গুণ বেশি তাপ শোষণ ও সঞ্চালনে সক্ষম। এই গবেষণা বলছে প্রাকৃতিক চক্রেই পৃথিবীর অভ্যন্তর অত্যন্ত দ্রুত গতিতে উষ্ণতা হারাচ্ছে। উত্তাপ হারিয়ে এক সময় মঙ্গলের মতো প্রাণহীন গ্রহে পরিণত হবে পৃথিবী।

 

কলমকথা/বি সুলতানা